সোমবার, ০৬ মে ২০২৪, ২৩ বৈশাখ, ১৪৩১
ভূঁইয়া কামাল মুলাদী (বরিশাল)।।
বাংলাদেশের বিখ্যাত সকল ফুলের মধ্যে গন্ধরাজ ফুল একটি অন্যতম ফুল। গন্ধরাজ বাংলাদেশে খুবই পরিচিত ফুল। বাংলাদেশের বিভিন্ন অঞ্চলে কম বেশী এই ফুল দেখতে পাওয়া যায়। গন্ধরাজ ফুল ফুলের রাজ্যে অনন্য।
আফ্রিকা, এশিয়া, অস্ট্রেলেশিয়া ও ওশিয়ানিয়ার ক্রান্তীয় ও উপক্রান্তীয় অঞ্চলের চিরহরিৎ পুষ্পল গাছ এটি, প্রায় আড়াইশ’ রকমের প্রজাতি পাওয়া যায়। গাছের দৈর্ঘ্য তিন থেকে পাঁচ ফুট পর্যন্ত হয়।
ফুলটির বিজ্ঞানসম্মত নাম Gardenia jasminoides, একে কেপ জেসমিনও বলা হয়। গার্ডেনিয়া শব্দটির উদ্যানের (গার্ডেন) সঙ্গে মিল থাকলেও এর উৎস অন্যত্র, প্রকৃতিবিদ ড. আলেক্সান্ডার গার্ডেনের নামানুসারে এর নামকরণ করা হয়েছে।
মুলাদী পৌরসভার ৩নং ওয়ার্ডের মরহুম আলহাজ্ব আঃ কাদের খানের মেয়ে ফুল প্রেমিক ফাতেমা কানিজ ঝুমুর ২০১৪ সালে গন্ধরাজ ফুলের গাছের একটি ডাল ভেঙ্গে এনে বর্ষার মৌসুমে ঘরের কাছে লাগিয়ে ছিলো। সে থেকে আজ ১৪ বছর ধরে গাছটি ফুল ফোটার মধ্যে দিয়ে সুগন্ধি ছড়িয়ে যাচ্ছে। ফুল ফোটার সময় হলেই ছুটে আসে চারদিক থেকে বধু আর মেয়েরা। ফুল খোপায় বেঁধে রাখার জন্য।
ফাতেমা কানিজ ঝুমুর বলেন, বাড়ির সৌন্দর্য বৃদ্ধির জন্য একটু পরিশ্রম করলেই সৌন্দর্য বৃদ্ধি করা যায়। গন্ধরাজ গাছ আর্দ্র, ছায়াযুক্ত পরিবেশ লাগাতে হবে, নিয়মিত পানি দেয়া ও মাটিতে সার প্রয়োগ। গাছকে ছাটাই করেও ফুলের সংখ্যা বাড়ানো যায়। এ ছাড়াও তিনি পাতা বাহার, লাল-সাদা জবা ফুল ও নয়নতারা গাছ লাগিয়ে বাড়ির সৌন্দর্য বৃদ্ধি করেছেন।
পুরো গ্রীষ্মকাল জুড়ে এই ফুল ফুটতে দেখা যায়। সাধারণ গন্ধরাজ ফুল সকাল বেলা ফোটে এবং রাত হলে এই ফুল আবার নিমিয়ে যায়। পৃথিবীতে অনেক প্রকারের গন্ধরাজ ফুল থাকলেও বাংলাদেশে মোট দুই প্রকারের গন্ধরাজ ফুল দেখতে পাওয়া যায়। সাধারণত ধবধবে সাদা গন্ধরাজ এবং হালকা হলুদ গন্ধরাজ ফুল বাংলাদেশের সব থেকে জনপ্রিয় ফুল।
ফুল ফোটার সময় সাদা থাকলেও ক্রমে হাল্কা হলুদ বর্ণ ধারণ করে এই ফুল। ফুলের ব্যাস তিন-চার ইঞ্চি হয়। পাতা দৈর্ঘ্যে তিন থেকে ছয় ইঞ্চি অবধি হয়, বিপরীত জোড়ে গজায়। পাতার রং গাঢ় সবুজ ও উপরিতল তেলতেলে। উচ্চ আর্দ্রতা ও উজ্জ্বল আলোয় গাছ ভালো বাড়ে।
গন্ধরাজ ফুল মেয়েদের বেশী পছন্দনীয়। ফুল ছিড়ে মাথার খোপায় বেধে রেখে মাথার সুন্দর্যবৃদ্ধি। ২-৩দিন ধরে ফুল তাজা থাকে আর সুগন্ধ ছড়ায়। গন্ধরাজ ফুল দ্বারা ফুলের তোড়া তৈরি করে পড়ার টেবিলে রেখে ঘড়ের সৌন্দর্য্য বৃদ্ধি করে। এছাড়াও এ ফুলের সুগন্ধ মানসিক চাপ কমাপে সাহায্য করে। ফুলের নির্যাস ঠান্ডা লাগা, সর্দি-কাশি, নিউমোনিয়া ইত্যাদি রোগের চিকিৎসায় ব্যবহৃত হয় ও ফুলের নির্যাস ত্বককে উজ্জ্বল করে তোলে।